প্রত্যাবর্তন
মুসলিমের ঘরে জন্ম নিয়েও আমি হয়ে পড়ি একজন নামকাওয়াস্তে, টাইটেলধারী, নাম সর্বস্ব মুসলমান। সেই ঘুটঘুটে অন্ধকারের মধ্যে আমি পথ চলতে থাকি। আমার চারপাশ ঘন কালো অন্ধকারে ঢাকা। তবুও, আমার মনে হয় আমিই ঠিক পথে আছি। বাকিসব ভুল, মিথ্যা…
এরকম অন্ধকারের মধ্যে পথ চলতে চলতে একদিন আমার ঘুম ভাঙে। আমি বুঝতে পারি আমি ঠিক পথে নেই। আমার গন্তব্য যেটা হওয়া উচিত ছিলো, আমি সেই পথ থেকে বিচ্যুত। এতোদিন যেটাকে আমি আলো ভেবে এসেছি, সেটা আসলে আলেয়া। হাওয়া আসলেই নিভে যাবে। যেটাকে আমি জীবন মনে করেছি, সেটা আসলে নরক। এক বিশাল পাপের সাগরে হাঁবুডুবু খেতে খেতে আমি ভুলতেই বসেছি যে, বাঁচতে হলে আমাকে তীরে উঠতে হবে। আমি সেই তীরের সন্ধান না করে উল্টো অহংকার আর দর্পের জন্য পুরোপুরিই ডুবতে বসেছিলাম।
আমি চেতনা ফিরে পাই। চোখ মেলে সামনে তাকাই। আমি শুনতে পাই, অদূর থেকে, খুব করুণ আর মায়াভরা স্পর্শে কেউ একজন আমাকে ডাকছে। এই ডাক আমার খুব পরিচিত। আমার খুব চেনা। মনে হচ্ছে, কতো সহস্রবার আমি এই ডাক শুনেছি। কিন্তু কখনোই এই ডাক আমার কাছে এতো আবেদনময়ী মনে হয়নি। কিন্তু, আজকে কেনো যেন এই ডাকটাকে আমার খুব আপন মনে হচ্ছে। চির পরিচিত।
আমি অনুভব করলাম, এই ডাক আমার মধ্যে শিহরণ জাগিয়ে যাচ্ছে। আমার বুকের ভেতর, আমার মনের জগতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। কে ডাকে? কে ডাকে আমায়? আমি ছটফট করতে থাকি। আমি শুনতে পাই, তখনও এক মধুর সুরে, এক নৈসর্গিক ঝঙ্কারে কেউ একজন আমায় ডেকে চলেছে…
‘হাই-আল- আস-সালাহহহ…’ ‘হাই-আল-আল ফালাহহহহ…’
আমাকে কল্যাণের পথে কেউ একজন ডেকে চলেছে। আমি সম্বিৎ ফিরে পাই। বুঝতে পারি, এ আমার চিরচেনা সুর। শৈশবের প্রথম কোলাহল। কৈশরের প্রথম ইবাদাতের ডাক… আর আমার যৌবন? হায়! আর একটু হলেই ডুবতে বসেছিলাম…
এভাবেই, মুসলিম হয়েও কতো হাজার হাজার মুসলিম যুবক-যুবতী আজ নিজেদের পথ ভুলে গেছে।
হারানো সেই পথ থেকে কেউ ফিরে আসে, কেউ হারিয়ে যায়। যারা ফিরে আসে, কেমন হয় তাদের গল্পগুলো? জাহিলিয়্যাত থেকে দ্বীনে ফিরে আসা সেই ভাই-বোনদের গল্পগুলো নিয়েই সংকলন হয়েছে- “প্রত্যাবর্তন”।
বইটি সম্পাদনা করেছেন ‘প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ’ এবং আরজ আলী সমীপে বইয়ের লেখক শ্রদ্ধেয় আরিফ আজাদ ভাই।
বইতে ‘দ্বীনে ফেরা’র গল্প আছে যাদেরঃ
১। Mohammed Touaha Akbar – উল্টো নির্ণয় বইয়ের লেখক
২। ওমর আল জাবির – ‘পড়ো’ সিরিজের লেখক
৩। S M Nahid Hasan – ‘আল কুরআনের ভাষা’ বইয়ের লেখক এবং আল-কুরআনের শব্দসমূহ এর সম্পাদক
৪। Rehnuma Bint Anis – ‘নট ফর সেল‘, বিয়ে‘, জীবনের সহজ পাঠ‘ ‘ওপারে‘ বইয়ের লেখিকা
৫। Shamsul Arefin Shakti – ডাবল স্ট্যান্ডার্ড এবং কষ্টিপাথর বইয়ের লেখক
৬। আরিফুল ইসলাম – আর্গুমেন্টস অফ আরজু এবং প্রদীপ্ত কুটির বইয়ের লেখক
৭। রাফান আহমেদ – বিশ্বাসের যৌক্তিকতা বইয়ের লেখক
৮। Muhammad Mushfiqur Rahman Minar – অন্ধকার থেকে আলোতে বইয়ের লেখক
৯। Ashraful Alam – অ্যান্টিডোট বইয়ের লেখক
১০। Jakaria Masud – ‘সংবিৎ‘ এবং ভ্রান্তিবিলাস বইয়ের লেখক
১১। মাসুদ শরীফ – বিশিষ্ট অনুবাদক ও সম্পাদক। তার অনূদিত কিছু বই: উমার ইবন আল-খাত্তাব রা. ১ম খণ্ড, মনের ওপর লাগাম
আছে ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটিতে মলিকুলার বায়োলজি নিয়ে পিএইচডি রত শ্রদ্ধেয় Saifur Rahman ভাইয়ের গল্প, আছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ এর Abdullah Saeed Khan ভাইয়ের গল্প, আছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের Nishat Tammim আপুর গল্প, বুয়েটের Kabir Anwar ভাই, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের Ruhul Amin ভাই, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের Shihab Ahmed Tuhin ভাই, অষ্ট্রেলিয়া প্রবাসী Mahmudur Rahman ভাই, Armaan Ibn Solaiman ভাই, বুটেক্সের Faisal Bin Yousuf ভাই এবং কলকাতার কিছু রিভার্টেড ভাইদের ইসলামে আসার গল্প নিয়েই লেখা। আশা করছি বইটি উঠতি জেনারেশন, যারা দ্বীন থেকে দূরে আছে, তাদের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে, ইন শা আল্লাহ্।
- Get link
- X
- Other Apps
- Get link
- X
- Other Apps
Comments
Post a Comment